লেকহেডে এপ্লিকেশন করার সময় ২য়বার বুঝলাম ফ্যামিলি নেম, ফার্ষ্ট নেম ইত্যাদি হাবিজাবি বিষয় আছে। আর ১মবার বুঝেছিলাম ডিভিতে এপ্লিকেশন করার সময়। কানাডা আসার পরে কিছুদিন ভালই ছিলাম। এরপরে শুরু হল নাম নিয়ে ঝামেলা যখন আমি উঠলাম আমার আরও কয়েকজন বন্ধুর সাথে।
ঘটনা শুরু সেখান থেকেই।


কবির আমার কলেজের বন্ধু। পড়ে লেকহেডে ইলেক্টিক্যালে। পুরা নাম “মোঃ কবির হোসেন”। আরও একজন ছোট ভাই ছিল। ওর নাম রিপন। পুরা নাম “মোঃ সানাউল্লাহ হোসেন”। রিপন পড়ে কম্পিটারে। আর আমি “মোঃ সেলিম হোসেন”। ১ম বিড়ম্বনার স্বীকার হলাম ক্রেডিট কার্ডে এ্যাপ্লিকেশন করার পরে। যতগুলোতে এ্যাপ্লিকেশন করি সবগুলো রিজেক্ট হয়। আমাকে জানানো হয়, আমার ক্রেডিট স্কোরের অবস্থা ভাল নয়। আমি মনে মনে বলি, আমার ক্রেডিট কার্ডই নাই তো স্কোর কেমনে হয়?? পরে কবির আর রিপনের সাথেই আলাপ করে বুঝলাম, আমার নামের সাথে ওদের নাম গুলিয়ে কিছু একটা ঐ ব্যাটারা করেছে। এর এটা হয়েছিল আমাদের সবার একই ঠিকানা হবার কারনে। এরপরে এমবইএন’র একটা ক্রেডিট কার্ড পেলাম অনেক তর্ক করে।

এরকিছুদিন পরে কবির দেশে গেল। সিয়ার্সের ক্রেডিট কার্ড ডিপার্টমেন্ট থেকে আমাকে প্রায়ই ফোন করে বলে আমি তাদের বিল দিচ্ছি না। আর আমি কই, আবে আমার তো তোগো কার্ডই নাই। ওরা আমারে ডর দেখায় বলে কালেক এজেন্সির কথা বলে। অনেক পরে ওদেরকে বুঝাতে পেরেছিলাম, আমি আর কবির এক লোক নই।

এখনও আমার ক্রেডিট হিস্ট্ররীতে কবিরের একটা ক্রেডিট কার্ড ঢুকে আছে।

আমার লেকহেডের টিউশন পে-রোলে দেওয়া হলেও ইউনি থেকে কত চিঠি যে পেয়েছি, টিউশন দেয়নি বলে তার হিসাব নাই।



২০০৬ এর সেপ্টেম্বরে আমি আমার বর্তমান ইউনিতে আসি। ২০০৭ এর মার্চে আমি একটা চিঠি পাই লেকহেড থেকে। চিঠির সারমর্ম হল, আমি ডিসেম্বরে একটা ডাক্তারের এ্যাপনয়মেন্ট মিস করছি। কাজেই তার জরিমানা ১০ টাকা দিতে হবে। আমি বুঝে উঠতে পারি না, ঘটনা কি । লেকহেডকে মেইল করে মনোঃপুত উত্তর না পেয়ে শেষে ফোন করে বুঝলাম, চিঠিটা আসলে কবিরের।

এইসব ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে গুয়েল্ফের রেজিষ্টার অফিসে গিয়ে আমি উনাদেরকে বুঝাতে সমর্থ হলাম যে আমার মিডল নামই অন্যের থেকে আলাদা করার নাম। তার পরেও শেষরক্ষা আমার হয়নি।

সবচাইতে ভয়ংকার ঘটনাটা ঘটেছে গত ৩/৪ মাস আগে। হঠাৎ বাসায় একদিন একটা চিঠি পেলাম ইউনি থেকে। তার সারকথা হল, আমি কম্প্রিহেনসিভ এক্সামে ফেল করায় আমি ইউনি থেকে কিকড আউট। আমি বুঝতে পারি না, আমি আবার কবে ফেল করলাম :), আমি তো সেই ২০০৭ এ আমি কম্প্রিহেনসিভ এক্সাম শেষ করে বসে করেছি!!

সকালে অফিসে এসেই বসকে দেখালাম চিঠিটা। বস তার সেক্রেটারীকে ডেকে জিজ্ঞাসা করতেই সে সরি বলতে শুরু করল।
কারন ভুলটা সেই করেছিল।
চিঠিটা ছিল, অন্য এক আমাদের দেশী মোঃ হোসেনের, তার নামটা আর নাই বা বললাম।

0 মন্তব্য: