Thursday, August 2, 2007

স্মৃতি রিভিউ- ১

কলেজে ভর্তি হব বলে অনেক ঘটা করে ঢাকা আসলাম। বড় ভাই ঢাবি'র রসায়নের ছাত্র (৯২ ব্যাচ) হওয়ায় তার কাছেই উঠলাম যথারীতি শহিদুল্লাহ হলের এক্সটেনশনের ১২ নং রুমে। আমার বড় ভাই্য়ের সাথে আমার সম্পর্ক ছিল বন্ধুরমত। বলা যায় সবকিছুই শেয়ার করতাম। কয়েকদিন পরে ভর্তি হলাম শুভেচ্ছা কোচিং সেন্টারের বকশিবাজার শাখায়। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে একসাথে ভর্তি হলাম এই শাখাতেই। বন্ধুরা ছিল সবাই আশেপাশেই। আস্তে আস্তে বড় ভাইয়ের রুমমেটদের সাথে খাতির হতে থাকল। এর মধ্যে আফরাদ ভাই (প্রাণ রসায়ন), রফিক ভাই অন্যতম। রফিক ভাই সেই রকম সব কবিতা লিখত আর সাথে আবৃত্তি তো ছিলই। নতুন বাসায় উঠার আগ পর্যন্ত সেই ১২ নং রুমেই থাকতে হল।
আমার বড় ভাইয়ের আর একজন বন্ধু ছিল নাম কামাল। আমাদের গ্রামেরই । উনি পড়তেন জগন্নাথে। মাঝে মাঝেই উনি আসতেন। একদিন আমি দুপুরে ক্যান্টিনে খেতে যাব এমন সময় কামাল ভাই এসে হাজির। বড় ভাইয়ের কথা জিজ্ঞেস করতেই আমি বললাম, ভাই তো ক্লাস থেকে আসবে সেই বিকালে।কামাল ভাই বলল, তুই তাহলে একটু দেরি কর, আমিও তোর সাথে খেতে যাই। দুইজন একসাথে গেলাম খেতে ফজলুল হক হলের ক্যান্টিনে। খেতে খেতে কামাল ভাই কয়েকটা (ক্যান্টিনের ভাষায়) মুরগী ও গরু সাবার করেছে আর আমি ২ টা মুরগীতেই আটকে গেলাম। আর তার সাথে ছিল সবজি। বিল দেবার আগে কামাল ভাই আমাকে বলছে এই শোন তুই কোন কথা বলবি না। আমি মাথা নেড়ে সম্মতি দিলাম।
ম্যানেজার বয়কে বলছে এই বিল কত? ঐ ছেলেটা হিসাব করছে এমন সময় কামাল ভাই বলল, শোন ম্যানেজার ঐ ৫/৬ এর হিসাব বাদ দে মোট ৩ টার হিসাব কর। ম্যানেজার কয় ভাই এইটা কি বলেন? কামাল ভাই বলল, বহিরাগতরা এসে ফাও খেয়ে গেলে তোদের সহ্য হয়, আর আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অরিজিনাল ছাত্র কয়েক টাকা কম দিলেই তোদের যত সমস্যা?
শেষ পর্যন্ত, ম্যানেজার টাকা কমই রেখেছিল। একদিন বড় ভাইকে এই কথা জানানোর পরে ভাই আর উনার সাথে আমাকে খেতে যেতে নিষেধ করল। কিন্তু সেকথা আর পুরোপুরি মানতে পারিনি।

0 মন্তব্য: